ব্রাহ্মবাড়িয়া জেলায় অডিশনের মাধ্যমে হিফজুল কুরআন ২০২০ প্রতিযোগীতা শুরু
ইয়েমেন শিশুদের কান্না সৌদি আরবের সন্ত্রাস দমন
বেশ কয়েক বছর যাবৎ সৌদি আরবের তান্ডবে ইয়েমেনের অবস্থা খুবই সংকটাপন্ন। হুথিদের বিরুদ্ধে এই অভিযান করার কথা বললেও আসলে সৌদি আরব পুরো ইয়েমেনকেই আজ হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। বিভিন্ন সময় সৌদির তেল স্খাপনাগুলোতে ড্রোন হামলার অযুহাতে এই ধরনের বরর্বর হামলা করে আসছে তারা। কিন্তু বাস্তবিক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই সকল ড্রোন হামলার ধরন দেখে বুঝা যাচ্ছে এটি আসলে হুথি বা ইয়েমেন থেকে হামলা করা অসম্ভব। এর পরও সৌদি এই অযুহাত দেখিয়ে বরর্বর হামলা করে যাচ্ছে। তবে, কিছু দিন যাবৎ ইয়েমেনে হামলার তেমন কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে যে ক্ষতি ইয়েমেনের হয়েছে তা পুষাবার নয়।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, সৌদি আগ্রাসনের শিকার প্রতি ১২ মিনিটে ইয়েমেনের একটি করে শিশু মারা যাচ্ছে। এ হিসাবে ঘন্টায় ৫ জন, ১দিনে ১২০ জন করে মারা যাচ্ছে। কিন্তু বিশ্ব মোড়লদের এ নিয়ে কোন মাথা ব্যাথা নেই বললেই চলে। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের উন্নয়ন কার্যক্রম বা ইউএনডিপি’র পরিচালক আখিম স্টেইনার এ তথ্য জানান। তার দাবি, খাদ্য, সুপেয় পানি ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে এসব শিশু প্রাণ হারাচ্ছে। তিনি আরোও বলেন, ইয়েমেনের অবস্থা খুবই খারাপ এবং দিন দিন আরোও খারাপ অবস্থায় যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ উপেক্ষা করছে। আর এজন্য দায়ি সৌদি আরবের মতো রাষ্ট্রগুলো।
জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ বিষয়ক উপ মহাসচিব মার্ক লোকক সম্প্রতি বলেছেন, ইয়েমেন বর্তমান মানব ইতিহাসের ভয়াবহত মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে এবং কিছুদিনের মধ্যে তা আরোও তীব্রতর হবে যা কল্পনার বাইরে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে এবং সৌদি আরবের নিরাপত্তা দেখিয়ে আমেরিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ আরো কিছু আঞ্চলিক দেশের সহযোগিতায় সৌদি আরব ২০১৫ সালো মার্চ মাস থেকে ইয়েমেনে ভয়াবহ আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত সরকারি হিসাবে ১৫ থেকে ২০ হাজারেরও বেশি নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে। কিন্তু হামলা নিয়ে জাতিসংঘ বা ওআইসির পক্ষ থেকে তেমন কোন প্রতিবাদ না থাকলেও হামলা পরবর্তি মহামারি বা দুর্ভিক্ষ নিয়ে প্রতি নিয়ত এরা বিভিন্ন বক্তব্যের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে, যা লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করেছেন মানবাধিকার সংস্থাগুলো।
হাদিসের বিভিন্ন বর্ননা থেকে জানা যায়, ইসলামী যুগের সূচনালগ্নে হেজাজ ছিল পাখির মতো আর সিরিয়া ও ইয়েমেন ছিল তার দুইটি ডানাস্বরূপ। প্রায়ই রাসুল (সা.) জিহাদ ও অন্য গুণাবলির ক্ষেত্রে উভয়টিকে একসঙ্গে উল্লেখ করতেন। ইয়েমেন হলো আরবদের মূল। তারা স্থিতি, গাম্ভীর্য, সঠিক বোধ ও সচেতনতার অধিকারী। কাব্যশক্তি ও শিল্প-সাহিত্যের সমঝদার। রেসালাতের সমর্থক। তারা ছিল জিহাদ ও বীরত্বের নায়ক। ইয়েমেনবাসীর জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) বরকত ও কল্যাণের দোয়া করেছেন। একে ঈমানের ভূখ- হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ইয়েমেনিদের ঈমান, প্রজ্ঞা, সঠিক বোধ ও কোমলতার প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, ‘তারা ইসলামের সৈনিক ও সাহায্যকারী।’ আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হে আল্লাহ তুমি আমাদের সিরিয়ায় সমৃদ্ধি দান করো। আমাদের ইয়েমেনে সমৃদ্ধি দান করো।’ (বোখারি)।
হে ইয়েমেনবাসী! তোমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইসলাম ও আরববাসীর স্বার্থকে প্রাধান্য দাও। এক কাতারে দাঁড়িয়ে ইয়েমেনের আক্রান্ত মাটি থেকে কাঁটা উৎখাত করো। একতাবদ্ধ হওয়াই বিজয়ের সবচেয়ে বড় টনিক। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা পরস্পর বিরোধে জড়িও না, তাহলে ব্যর্থ হবে আর তোমাদের ক্ষমতা খর্ব হবে, তোমরা ধৈর্য ধারণ করো, আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সূরা আনফাল : ৪৬)।